বৃহস্পতিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০১২

ভৌগলিক প্রোফাইল




অক্ষাংশ: ২২.৩৮ ডিগ্রি হতে ২৩.৪৪ ডিগ্রি উত্তর
দ্রাঘিমাংশ: ৯১.৪২ ডিগ্রি হতে ৯২.১১ ডিগ্রি পূর্ব
সীমানা: উত্তর ও উত্তর-পশ্চিমে- ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য
পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বে      -রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা
দক্ষিণ-পশ্চিমে          -চট্টগ্রাম জেলা
পশ্চিমে                 -ফেণী নদী ও ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যএর অবস্থা
ভৌগোলিক রূপ: পাহাড়, ছোট ছোট নদী, ছড়া ও সমতল ভূমি মিলে এটি একটি অপরূপ   সৌন্দর্যমন্ডিত ঢেউ খেলানো এলাকা।

জেলার পটভূমি



 বৃটিশ সরকার কর্তৃক ১৮৬০ সালে স্বতন্ত্র জেলা ঘোষণা করার আগে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছিল বৃহত্তর চট্টগ্রামের একটি অঙ্গ। পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা ০৩টি মহকুমা নিয়ে গঠিত ছিল। মহকুমাগুলি ছিল রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি। রামগড় মহকুমা ০৩টি থানা নিয়ে গঠিত ছিল। থানাগুলি ছিল রামগড় সদর, মহালছড়ি ও দীঘিনালা। খাগড়াছড়ি তৎকালীন মহালছড়ি থানাধীন একটি ইউনিয়ন ছিল। পরে ১৯৬৮ খ্রিষ্টাব্দে খাগড়াছড়িকে থানায় উন্নীত করা হয়েছিল। অতঃপর ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দের ০1 নভেম্বর তারিখে খাগড়াছড়ি পূর্ণাঙ্গ জেলায় রূপান্তরিত হয়। প্রাচীন জনপদ ও নগরী হিসেবে রামগড় নামে জেলা ঘোষণা করাটা স্বাভাবিক হলেও খাগড়াছড়ির ভৌগলিক অবস্থান, পারিপার্শ্বিক অবস্থা, যোগাযোগ সুবিধা প্রভৃতি রামগড়ের চেয়ে অধিকতর সুবিধাজনক স্থান বিধায় সরকার খাগড়াছড়িকে জেলা ঘোষণা করে। খাগড়াছড়ি নামের উৎপত্তি হয়েছিল নল খাগড়ার বন থেকে। খাগড়াছড়ি সদর শহরের বুক চিরে একটি ছড়ানদী বহমান রয়েছে। অতীতে উক্ত ছড়ানদীর দু’পাড়ে গভীর নলখাগড়ার বন ছিল। এই নল খাগড়ার বন থেকে খাগড়াছড়ি নামের উৎপত্তি। খাগড়াছড়ির প্রাচীন নাম ছিল তারক।

এক নজরে জেলা


১।      আয়তনঃ ২,৬৯৯.৫৬ বর্গ কি.মি.।

২।      নির্বাচনী এলাকাঃ ২৯৮ পার্বত্য খাগড়াছড়ি।
৩।        সংসদীয় আসনঃ ০১টি।
৪।      উপজেলাঃ ০৮টি (খাগড়াছড়ি সদর, দীঘিনালা, পানছড়ি, মাটিরাঙ্গা, মানিকছড়ি, মহালছড়ি, লক্ষ্মীছড়ি
ও রামগড়)।
৫।      থানাঃ ০৯টি।

৬।      পৌরসভাঃ ৩টি (খাগড়াছড়ি, রামগড় ও মাটিরাঙ্গা)।

৭।      ইউনিয়নঃ ৩৫টি।

৮।      মৌজাঃ ১২১টি।
         
৯।      গ্রামঃ ১,৩৮৮টি।

১০।       জনসংখ্যাঃ ৫,১৮,৪৬৩ জন (পুরুষ-২,৭১,১৩১জন এবং মহিলা-২,৪৭,৩৩২জন)
             [২০০১ সালের আদম শুমারি অনুসারে]।
(ক) উপজাতি-২,৬৯,৯০৪জন (৫২%)।
      [চাকমা-১,৪৬,০৪৫, মারমা-৫৫,৮৪৪, ত্রিপুরা-৬৭,৩৪২, অন্যান্য-৬৭৩]
(খ) অ-উপজাতি-২,৪৮,৫৫৯ জন (৪৮%)।

১১।    জনসংখ্যা ঘনত্বঃ প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৯২ জন।
১২।    শিক্ষার হারঃ ৪৪.০৭% (পুরুষ-৫৪.১৯%, মহিলা-৩৩.৬২%)।

১৩।   প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গমনের হারঃ ৮৩%।

১৪।    শিক্ষা প্রতিষ্ঠানঃ ৫৪৭টি।
(ক) কলেজ-৭টি।
(খ) উচ্চ বিদ্যালয়-৭১টি (সরকারি-৫টি ও বেসরকারি-৬৬টি)।
(গ) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়-৪২০টি (সরকারি-৩২০টি ও বেসরকারি-১০০টি)।
(ঘ) কিন্ডার গার্টেন-০৯টি।
(ঙ) মাদ্রাসা-১৩টি (মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এর অধীন)।
(চ) এবতেদায়ী মাদ্রাসা-২২টি।
(ছ) অন্যান্য ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-০৩টি।
(জ) কারিগরি বিদ্যালয় বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়-০১টি।
(ঝ) টেক্সটাইল ভোকেশনাল ট্রেনিং ইনস্টিটিউট-০১টি।
১৫।    ধর্মীয় উপাসনালয়ঃ ৭৫১টি।
            (ক) মসজিদ-২৫৫টি।
            (খ) বৌদ্ধ মন্দির (ক্যাং)-২৬৩টি।
            (গ) মন্দির-২০৭টি।
            (ঘ) গীর্জা-২৬টি।

১৬।    গুচ্ছগ্রাম ও ভারত প্রত্যাগত শরণার্থীঃ
            (ক) ১। গুচ্ছগ্রামের সংখ্যা-৮১টি।
                 ২। গুচ্ছগ্রামে বসবাসরত পরিবার-৫৩,৮৫৫টি।
                 ৩। গুচ্ছগ্রামে রেশন কার্ডধারী পরিবার-২৬,২২০টি।
                 ৪। রেশন কার্ডবিহীন পরিবার-২৭,৬৩৫টি।
                 ৫। গুচ্ছগ্রামে বসবাসকারী জনসংখ্যা-২,১২,১৬৫জন।
            (খ) ১। ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থী পরিবার-১২,১৭০টি।
                 ২। রেশন কার্ডধারী পরিবার-১২,১৭০টি।
                 ৩। ভারত প্রত্যাগত উপজাতীয় শরণার্থীর সংখ্যা-৬৪,৩৩৪জন।

১৭।    খাস জমি সংক্রান্তঃ
(ক) মোট খাস জমির পরিমাণ-৩,০৫,৯৬৫.৭৩ একর।
(খ) বন্দোবস্তকৃত জমির পরিমাণ-১,৮০,২৭৯.৬২ একর।
            (গ) বর্তমানে খাস জমির পরিমাণ-১,২৫,৬৮৬.১১ একর।

১৮।   সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানঃ
            (ক) সিনেমা হল-০১টি।
(খ) উপজাতীয় সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট-০১টি।
(গ) শিশু একাডেমি-০১টি।
(ঘ) শিল্পকলা একাডেমি-০১টি।
১৯।    স্টেডিয়ামঃ ০১টি (জিমনেসিয়ামসহ)।

২০।   প্রেস ক্লাবঃ ০২টি।

২১।    জেলা কারাগারঃ ০১টি।

২২।   দর্শনীয় স্থানঃ
v        আলুটিলা পাহাড়ের রহস্যময় সুড়ঙ্গ ;
v        নুনছড়ি মৌজার দেবতা পুকুর;
v        রিছাং ঝর্ণা;
v        ঐতিহাসিক রামগড় (ইস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার রাইফেলস্ বর্তমান বিডিআর এর প্রথম হেডকোয়ার্টার);
v        রামগড় লেক;
v        পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের খামার;
v        দীঘিনালা সংরক্ষিত বনাঞ্চল;
v        ভগবান টিলা।
২৩।   পর্যটন কেন্দ্রঃ
(ক) আলুটিলা পর্যটন কেন্দ্র।
                                           (খ) নূনছড়ি দেবতা পুকুর।
                                           (গ) দীঘিনালা সংরক্ষিত বনাঞ্চল।
(ঘ) খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণা কেন্দ্র।
(ঙ) দুই টিলা ও তিন টিলা, দীঘিনালা।
(চ) ভগবান টিলা

২৪।    নদীঃ ০৩টি (চেঙ্গী, মাইনী, ফেণী)।

২৫।   চা-বাগানঃ ০১টি (রামগড়)।

২৬।   রাবার বাগানঃ ৩,৪০০.০০ একর।

২৭।    সেনাবাহিনী ব্রিগেডঃ ০২টি (খাগড়াছড়ি ও গুইমারা)।

২৮।   বিডিআর সেক্টরঃ ০১টি।

২৯।   ব্যাংকঃ ০৬টি ( মোট শাখা-২১টি)।

৩০।   এনজিওঃ ৩৪টি।
            (ক) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক-০৭টি।
            (খ) স্থানীয়-২৭টি।

৩১।   প্রধান সমস্যাঃ বিদ্যুৎ।

৩২।   যোগাযোগ ব্যবস্থাঃ 
পাকা রাস্তা-২৯৬.৩৬ কি. মি.।
আর্ধ পাকা রাস্তা-২৬১ কি. মি.।

৩৩।   প্রাকৃতিক সম্পদঃ   
            (ক) কৃষিজ-(১) প্রধান ফসলঃ ধান ,গম, ভুট্টা, সরিষা, তুলা, আখ ও শাকসবজি ইত্যাদি।
             (২) ফলমূলঃ আম, কাঁঠাল, আনারস, কলা, পেঁপে, পেয়ারা, লেবু  ও তরমুজ ইত্যাদি।
(খ) খনিজ- গ্যাস (সিমুতাং গ্যাসফিল্ড, মানিকছড়ি)।
(গ) বনজ- সেগুন, গামারী, কড়ই, গর্জন, চাপালিশ, জারুল ইত্যাদি।

৩৪।   সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রঃ
(ক) পর্যটন                                 (খ) বনজ সম্পদ
(গ) খনিজ সম্পদ                          (ঘ) হস্তশিল্প
(ঙ) রাবার শিল্প                            (চ) ফলভিত্তিক শিল্প।

এক নজরে খাগড়াছড়ি জেলা


খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা সম্পর্কিত সাধারণ তথ্য

জেলা সৃষ্টির ইতিহাস --- পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলটি বৃটিশদের শাসন আমলে বৃহত্তর চট্টগ্রাম এর অংশ ছিলো। পার্বত্য চট্টগ্রাম অংশটি তিনটি মহকুমায় বিভক্ত ছিলো। মহকুমা তিনটির নাম যথাক্রমে-- রাংগামাটি, রামগড় এবং বান্দরবান। রামগড় মহকুমাটি তিনটি থানা যথাক্রমে-রামগড় সদর,দিঘীনালা ও মহালছড়ি এর সমন্বয়ে প্রশাসনিক অঞ্চল রুপে পরিচি‎হ্নিত ছিলো। খাগড়াছড়ি ছিলো মহালছড়ি উপজেলার একটি ইউনিয়ন। ১৯৬৮ সালে খাগড়াছড়ি ইউনিয়নকে থানা হিসেবে ঘোষনা করা হয়। ১৯৮৩ সালে ৮টি উপজেলা যথাক্রমে - মহালছড়ি,রামগড়,লক্ষ্মীছড়ি,দিঘীনালা,পানছড়ি,মানিকছড়ি মাটিরাংগা এবং খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার সমন্বয়ে খাগড়াছড়ি থানা কে জেলা হিসেবে প্রশাসনিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়। এ অঞ্চলটির পাশ দিয়ে বয়ে চলা ছড়া/ঝিরি র দুই পার্শ্বে নলখাগড়ার ঘন বন ছিলো। এলাকায় প্রচলিত আঞ্চলিক ভাষায় ছড়া/ঝিরি কে বলা হয় ‘ছড়ি’। জনশ্রুতি অনুসারে ছড়া/ঝিরি র দুই পার্শ্বে ঘন নলখাগড়া বনের আধিক্যতার কারণে এ অঞ্চলটির নাম করন করা হয় খাগড়াছড়ি।
জেলার অবস্থান -- ২২.৩৮০ এবং ২৩.৪৪০ উত্তর অক্ষাংশ, ৯১.৪৪০ পূর্ব দ্রাঘিমাংশ
জেলার সীমানাঃ খাগড়াছড়ি জেলার উত্তরে এবং উত্তর-পশ্চিমে ভারতের পুরা রাজ্য, পূর্বে এবং দক্ষিণ-পূর্বে ও দক্ষিণে রাংগামাটি জেলার যথাক্রমে বাঘাইছড়ি,লংগদু এবং নানিয়াচর উপজেলা, দক্ষিণ-পশ্চিমে চট্টগ্রাম জেলার ফটিকছড়ি উপজেলা

জেলার আয়তন ---- ২,৬৯৯,৫৬ বর্গ কিলোমিটার

জলবায়ু-- সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা ৩০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বনম্নি গড় তাপমাত্রা ২০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস । বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত ৩৮.৩২
মিলিমিটার

নদ-নদী---- ৩(ফেণী , চেংগী ও মাইনী )

প্রশাসনকি উপজলো --- ৮টি
পৌরসভা ---- ০৩টি (রামগড়,মাটিরাংগা এবং খাগড়াছড়ি সদর)
সার্কেল-২টি (মং সার্কেল এবং চাকমা সার্কেল এর কিয়ংদংশ )
ইউনয়িন ---- ৩৪টি

মৌজা --- ১২১টি
গ্রাম ---১৩৮৮টি
জনসংখ্যা--- ৫,১৮৬৬৩
জনসংখ্যার ঘনত্ব --- প্রতি বর্গকিমি এ ১৯২ জন
ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান --- ৭৫১টি(মসজিদ-২৫৫টি,বৌদ্ধ মন্দির-২৬৩টি,হিন্দু ধর্মাবলম্নীদের মন্দির-২০টি ও গীর্জা-২৬টি
বিনোদন ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র --- ০৪টি
এনজিও ----- ৩৪টি